ব্রেকআপ অনু (পর্ব-৩) [শেষ পর্ব]



এবারে সত্যিই খারাপ লাগা শুরু হয়ে গেল, সাথে টেনশনও হচ্ছিলো। কারন হঠাত কি হল যে ও এভাবে চলে গেল। তাও আমাকে না বলেই। আমি যতদূর ওকে চিনি তাতে, লাস্ট রিলেশন টা ব্রেকআপ করাতে না পারায় এমনটা করার তো কোন প্রশ্নই ওঠে না। বরং আরো ভালো কোন প্লান নিয়ে ব্রেকআপ করানোর জন্য উঠে পরে লাগার কথা ছিল ওর। কিন্তু তা না করে চলে গেল। তার মানে ঘটনা অন্যকিছু। তাহলে নিশ্চই সিরিয়াস কিছু একটা হয়েছে।

আবার গেলাম ওর রুমমেটের কাছে। যেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ওর বাড়ি চেনে কিনা। সে বলল, চেনে না। আমার একটা পেনড্রাইভ ওর কাছে ছিল। ছোটখাটো সাইজের না, পুরা ৬৪ জিবির পেনড্রাইভ। এতসবের মাঝেও এটার কথা ভুলিনি। এরপর জিজ্ঞাসা করলাম, কিছু বলে গেছে কিনা বা দিয়ে গেছে কিনা।  তখনই বলল,
- অনু, একটা চিঠি দিয়ে গেছে। আর বলেছে যদি কেউ চায় তাহলে তাকে দিতে। না চাইলে কাউকেই যেন চিঠির কথা না বলি। কারন যার দরকার সে নিজেই এসে চাইবে এটা।
- কিন্তু এমন কিছু কি বলে নাই যে চিঠিটা কার জন্য?
- না। আমি জিজ্ঞাসা করাতে আমাকে বলেছে, "যার দরকার সে নিজেই চাইবে।"
- তাড়াতাড়ি দাও তো চিঠিটা। আর কোন পেনড্রাইভ দিয়ে গেছে?
- না।


গেছে তো গেছে আমার পেনড্রাইভ টাও নিয়ে গেছে। যাই হোক, সেটা নিয়ে আমার রুমে চলে আসলাম। খুলে দেখি কিছু একটা লেখা। তবে কি যে লেখা তা পড়ার কোন উপায় নাই। কারন এখানে উল্টাপাল্টা সব আলফাবেট লেখা। এর আগের লাইনে কিছু সংখ্যা লেখা। আর একদম শেষ লাইনেলেখা GoodLuck। সম্পূর্ণ চিঠিটা এরকম দেখতে ছিল,

53484131
iZTDTmZWBev9bkCcK0mXU8WAC60=
GoodLuck

কিছু একটার সাথে মিল আছে বুঝতে পারছিলাম। আর সাথে এটাও বুঝতে পারছিলাম যে আমার ব্রেন ঠিক মত কাজ করছে না। আমি কোন কিছুই ঠিক মত মনে করতে পারছি না। হয়তো টেনশনের কারনে এমনটা হচ্ছে।

কিন্তু যাই হোক, এ কেমন চিঠি?
আমার জীবনে এমন অদ্ভুত কিছু আগে দেখিনি।
হঠাত মাথায় আসলো, মাঝের লাইনটা কোন একটা এনকোডেড টেক্সট।
(এনকোড হল, কোন লেখাকে সবার থেকে গোপন রাখার জন্য একটা আলাদা ধরনের সিরিয়াল মেইন্টেইন করে লেখাকে সাজানোর সিস্টেম। আর এনকোড করা কোন লেখাকে এনকোডেড টেক্সট বলে।)

তখন আরো একটা জিনিস মাথায় আসলো, তাহলে ওখানে যে GoodLuck লেখা সেটা অবশ্যই এই কোডের কি (key)  হবে। অর্থাৎ ওইখানে কি লেখা তা দেখার জন্য আমাকে এই GoodLuck শব্দ টা ব্যবহার করা লাগবে। তা নহলে GoodLuck এক সাথে লিখতো না। কিন্তু প্রথম লাইনের কোন ক্লু পেলাম না। আর কোন ফরমেটে এনকোড করবো সেটাও জানি না। কারন হাজার হাজার এনকোডিং সিস্টেম আছে। একটার টা অন্যটায় কাজ করে না। 

অনেক ভেবে অনুমান করলাম হয়তো প্রথম লাইন টা এনকোড ফরমেট। কিন্তু সেটাও এনকোডেড। এবার বসে পরলাম প্রথম লাইনের কোড ব্রেক করতে। এত্ত উন্নত প্রযুক্তির সব কোড ট্রাই কিন্তু কোনটাই কাজ হল না।

অবশেষে হঠাত মনে হল, ওটা তো হেক্সা কোডের মত লাগে। আর তাছাড়া, আমার এবং অনুর ২ জনেরই ফেভারিট নাম্বার সিস্টেম হল হেক্সাডেসিমেল। এজন্যই বিষয়টা মাথায় এসেছে। কনভার্ট করে দেখি আসলেই তাই। আর প্রথম লাইনের লেখা ছিল SHA1। এটাই এনকোডিং ফরমেট।

সাথে সাথে এনকোডিং ফরমেট আর কি দিয়ে ট্রাই করলাম। এবং কাজ হল। ২য় লাইনে আসলে একটা লিংক। এরপর গেলাম সেই লিংকে। সেখানে মাত্র একটা যায়গার এড্রেস আর একটা বাড়ির ছবি দেওয়া। 😒
.
সেই সকাল থেকে না খেয়ে এইটার পিছে ছুটলাম। মেজাজ পুরাই খারাপ হয়ে গেল। 😒
.
আবার হঠাত মনে হল, এটা অনুর বাড়ির ঠিকানা হতে পারে। যেহেতু এখন রাত। তাই এখন আর বের হলাম না।

পরেরদিন বের হয়ে পরলাম সেই ঠিকানায়। দীর্ঘ ৬ ঘন্টার পথ অতিক্রম করে সেখানে পৌছে গেলাম। এক্স্যাক্ট একটা বাড়ি পেয়ে গেলাম। ঠিক লিংকের ছবির সেই বাড়ি টা।

ভিতরে যাবো কিনা ভাবছি। এমন টাইমে বাসা থেকে একটা পিচ্চি দৌড়াতে দৌড়াতে বের হয়ে চলে যাচ্ছিলো। ওকে দাড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,
- এই যে বাবু, এখানে কি অনু নামে কেউ থাকে?
- বলতে পারি।
- তাহলে বলো
- আগে চকলেট।
- এখানে চকলেট কোথায় পাবো?
আমাকে একটু দূরে একটা দোকানে নিয়ে গেল। কি আর করার দিলাম একটা চকলেট কিনে। এরপর জিজ্ঞাসা করায় বলল,
- থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে।
- মানে কি! তোমাকে যে চকলেট কিনে দিলাম। তাহলে তুমি ঠিক মত বলবা না? বলো বাবু, এখানে থাকে কিনা?
- চকলেটের যা সাইজ তাতে এর বেশি বলতে পারবো না।

কথা শুনে যেমন অবাক হচ্ছিলাম তেমন মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। পুলিশের মত ঘুষখোর টাইপের পিচ্চি। বড় হয়ে নিশ্চিত পুলিশ হবে। 😒
এবার রাগের ঠেলায় ১ বয়াম চকলেট কিনে দিলাম। সে তো মহা খুশি। এবার সে জানালো। এখানে অনু থাকে। তারপর,
- তাহলে, তুমি অনুর কি হও?
- আমি ওর ভাই।
- তাহলে ওকে একটু ডেকে দাও। 😁
- ডাকতে হলে, এর ৩ গুন চকলেট লাগবে।
.
এবার সত্যিই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। তাও মুখ বুজে কিনে দিলাম। কারন আর কোন উপায় নাই। আমার যাওয়া আসার ভাড়ার থেকে বেশি টাকা এখানেই খরচ হয়ে গেল।

এরপর পিচ্চি গেল অনুকে ডাকতে। একটু পর সে ফিরে এলো তবে ওর সাথে অনুকে দেখলাম না। সাথে আরেকটা পিচ্চি মেয়ে ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
- অনু কোথায়?
- এইযে অনু। (ওর সাথে আসা পিচ্চি মেয়েটাকে দেখিয়ে বলল)

এইবার মেজাজের বাধ ভেঙে গেল। কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না। কারন নিজের এলাকায় সবাই বাঘ। ছোট বাচ্চারাও এরকম বাটপার হয় আগে জানতাম না। 😖🔫
.
কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। এর মাঝে একটা লোক বের হয়ে এলো বাসা থেকে। আমাকে দেখেই বলল,
- তুমি অনুর ফ্রেন্ড না?
- হ্যা। কিন্তু আপনি আমাকে কিভাবে চিনলেন?
- আমি অনুর কাজিন। ও যে তোমার কথা কত বলছে আমাকে তার হিসাব নাই। তো এখানে কেন, ভিতরে চলো।

এভাবে, বাসার ভিতরে তো গেলাম তবে অনুর দেখা নাই। অনুর কাজিনের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানতে পারলাম,
ওই ছোট পিচ্চি ২ টা পাশের বাসায় থাকে। আর এটা অনুর কাজিনের বাসা। আর অনু বলেছিল ওর কাজিনকে যে, আমি কয়েকদিনের মাঝেই আসতে পারি। তাই একটা চিঠি তার কাছে দিয়ে বলেছে, যদি আসি তাহলে যেন আমাকে চিঠিটা দেয়। আর চিঠি দিয়ে যাওয়ার পর কোথায় গেছে সেটা জানা নাই তার। আর অনুর নাম্বারও অফ।

চিঠিটা হাতে পেয়ে খুলে দেখলাম আবার সেই এনকোডেড লেখা আর একটা ছবি। আল্লাহ, সত্যিই এবারে আমার মনে হচ্ছিলো আমি যেন কোন গুপ্তধন খুজছি। 😖😖😖
.
এর থেকে তো আগের যুগের গুপ্তধন খোজাও সহজ ছিল।

এই জন্যই মেয়েদের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে নাই। কারন এমনিতেই এদের মনে প্যাচের অভাব নাই। তার উপর ইঞ্জিনিয়ার হলে এরকমই প্যাচে ফেলে।

ভালো করে দেখে বুঝলাম, এটা ঠিক আগের ফরমেটেই এনকোড করা। তাই এটা মাত্র ৫ মিনিটেই বের করে ফেললাম।

আর এই চিঠিতে আরো একটা ঠিকানা।  ঠিকানা টা কোন বাড়ির ঠিকানা বলে মনে হল না।😖
.
আর এই ঠিকানাটা ওইখান থেকে টানা ৮ ঘন্টার রাস্তা। বের হয়ে পরলাম সাথে সাথেই।

৪ ঘন্টা পার হওয়ার পর হঠাতই মনে হল, আমি কেন শুধু শুধু এত কষ্ট করছি? ও তো শুধুই আমার ফ্রেন্ড ছিল, এরকম তো অনেক ফ্রেন্ডই ছিল আমার। তবে এইবার কেন আমি এত কষ্ট করছি?

কোন উত্তর খুজে পেলাম না। শুধু বুঝলাম কোন এক অজানা শক্তির কারনেই আমি এত কষ্ট করে যাচ্ছি। এর মাঝেই ফিল করলাম, আমার মোবাইল ভাইব্রেট করছে। বের করে দেখলাম শায়লা কল দিচ্ছে। এবং সারাদিনে অনেকবার কল দিয়েছে। তবে আমি রিসিভ কি করবো, খেয়ালই করিনি। এবার রিসিভ করে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললাম। তারপর ঘুমিয়ে গেলাম। এরপর সেই ঠিকানায় পৌছাতে পৌছাতে সকাল হয়ে গেল।

পৌছে দেখি সেটা একটা মাঠ টাইপের যায়গা। আর সেখানে একটা বেঞ্চ আছে বসার জন্য, ঠিক ছবির মত। এখন হঠাত দেখলাম বেঞ্চের পিছে আবার সেই এনকোডেড কিছু লেখা।

কি যে মনে হচ্ছিলো সত্যিই বলার মত ভাষা নেই। তবুও সেটা এনকোড করে আরো একটা লিংক পেলাম। সেটায় ঢুকে দেখি একটা মোবাইল নাম্বার আর তার নিচে লেখা, "কল দিয়ে ওই বেঞ্চেই অপেক্ষা কর।"

লেখাটা দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারলাম যে, ওটা আমার জন্যই লেখা। এবার সেই নাম্বারে কল দিলাম। ও রিসিভ করেই,
- ওইখানেই অপেক্ষা কর।

আর কিছু বললোও না, বলার সুযোগও দিলো না। ভয়ই পাচ্ছিলাম আমাকে কিডন্যাপ করার প্লান তো আবার। তাও ভয়ে ভয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

একটু পরই অনু চলে আসলো। ও সামনে আসার সাথেই প্রথমে সম্পুর্ন শক্তি দিয়ে ওকে একটা থাপ্পর মেরে নিলাম। থাপ্পর খেয়ে ভয়ংকর ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে শুধু বলল,
- এটার হিসাব পরে নিবো।
- তুই কি হিসাব নিবি! আগে আমার কাছে হিসাব দিয়ে নে। তোর জন্য সেই আজ ২ দিন ধরে শুধু এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় যাচ্ছি। এসব কি ফাজলামি শুরু করছিস আমার সাথে? আর আমাকে কিছু না বলেই কোথায় চলে আসছিস?
- আসছি ভালো করছি। আর তোরে এত ঝামেলা করে এত দূর কে আসতে বলছে?  তুই তো না আসলেই পারতি।
- না মানে, আমার পেনড্রাইভ টা নিতে আসছিলাম আর কি। (আসলে আমি নিজেই দ্বিধায় পরে গেছি, আসলেই তো এত কষ্ট করে না আসলেও পার‍তাম। তাও কেন আসছি। তাই বলেই ফেললাম)
- শুধুই পেনড্রাইভ!
- হ্যা। তা নাহলে আর কি?
- এই নে তোর পেনড্রাইভ। (এটা বলেই ব্যাগ থেকে আমার পেনড্রাইভটা দিয়েই হেটে চলে যাচ্ছে)
- আরেহ কোথায় যাচ্ছিস তুই! (ওর হাত টেনে ধরে)
- তাহলে সত্যি কথা বল এতদূর কেন আসছিস? (কাঁদা কাঁদা ভাব)
- আরেহ আসলে তোরে ছাড়া ভালো লাগতেছিল না আর অনেক টেনশন হচ্ছিলো। তাই আর কি
- টেনশন কেন হচ্ছিলো? তোর তো জিএফ আছে। আমার আর কি দরকার?
- আজব!! জিএফ আর তুই!!!   জিএফ তো জিএফই আর তুই তো তুই ই।
- আমি তো আমি কি?
- আরেহ, এত প্রশ্ন করতেছিস ক্যান?
- শোন, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আর আজ আমার বিয়ে। বিয়ের পর লন্ডন চলে যাবো।
- মানে!!!!! কিসব উল্টাপাল্টা বলতেছিস?!!!!!
- উল্টাপাল্টা বলার কি আছে?  আমি তো মেয়ে, আমার কি বিয়ে হবে না নাকি?
- কিন্তু তার পরেও....।  তুই জানালি না আমারে?
- জানাই নাই ভালো করছি। আমার বিয়েতে তোরে দাওয়াতও দিবো না।
- তুই দাওয়াত দিলেও যাবো না। ( 😂 উপরে হাসি থাকলেও আসলে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিলো)
- আচ্ছা, আমার বিয়ে হলে তো তোর সাথে আর কখনো দেখা জবে না। কথাও হবে না। তোর কষ্ট লাগবে না?
- হুর। কি যে কয়! 😂 আমি তো আরো বেঁচে যাবো। একটা ঝামেলা তো দূর হবে। তাড়াতাড়ি যা তুই। কিন্তু আর দেখা বা কথাও হবে না কেন?
- এমনি। আমিই করবো না। আমি গেলে যদি তুই বেঁচে যাস তাইলে আর তোরে জ্বলাবো ক্যান?
- আরেহ। আমি তো এমনিই মজা করলাম। তুই সবকিছু এত সিরিয়াসলি নিস ক্যান? কষ্ট তো হবেই কিন্তু, কি আর করার। 😞
- তার মানে, আমি তোরে যতই জ্বালাই আমি তোর সাথে থাকলে তোর ভালো লাগে?
- মোটেই না। তুই না থাকলেই বাঁচি। 😂
- ওকে। তাইলে যা তুই। আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমি যাই।
- আজব!!
- আজবের কি আছে! তোর তো ভালো লাগে না। তাই চলে যাচ্ছি।
- আরেহ, আমি তো মজা করলাম। তুই সাথে থাকলে ভালই লাগে। মনে শান্তি থাকে।
- দেখ একটা জিনিস চিন্তা করে দেখলাম।
- কি জিনিস?
- এমনিতে তোরে না জ্বলাইতে পারলে আমারও ভালো লাগে না। আবার আমার জ্বালাতন সহ্য করতেও তোর ভালই লাগে। আমার বা তোর বিয়ের পর তো এসব আর হবে না। তোরও খারাপ লাগবে আমারো খারাপ লাগবে। আবার আমার ছেলে তোর মেয়েকে ভবিষ্যতে রাস্তাঘাটে ডিস্টার্বও করতে পারে। কিন্তু যদি ওরা ভাই-বোন হয় তাহলে কিন্তু ডিস্টার্ব করার পরিবর্তে বরং আমার ছেলেই তোর মেয়েকে দেখেশুনে রাখাবে। বুদ্ধিটা কেমন? আর তুই রাজি তো?
- হুম। সেই বুদ্ধি। আমিও রাজি। তাহলে তো সমস্যা সমাধান হয়েই গেল।  😁 (যদিও কি সমস্যা আর কি সমাধান সব মাথার উপ্রে দিয়া গেল। হুদাই তাল মিলাইলাম ওর সাথে। 😂)
- কি কইছি বুঝে উত্তর দিচ্ছিস তো? 😒
- হ্যা। না বোঝার কি আছে?  এ তো পাগলেও বুঝবে।
- বল দেখি কি বুঝছিস।
- কি আবার, তোর ছেলে যেন আমার মেয়েকে ডিস্টার্ব  না  করর তাই ওদেরকে ভাই বোন বানাবো আমরা। এই তো? 😁
.
এটার বলার পর ও আমার দিকে তাকিয়েই আছে। ও শিওর বুঝেছে যে আমি কিছুই বুঝি নাই। কয়েক সেকেন্ড পর মাথায় আসলো, ওরা ভাই বোন কিভাবে হবে? 🙊
আবার আমি বললাম,
- অ্যা!!! ভাই-বোন?!!! কেমন ভাই-বোন?
- তোর হাতে বুড়ো আঙুল আছে?
- হ্যা আছে। কেন? 😁
- তুই ওইটা চুষতে থাক। আমি যাই। আর কোনদিন আমার খোজ নিস না।

এবারো পুরা ব্যাপার বুঝতে কয়েক সেকেন্ড লাগলেও ভালোভাবে বুঝে ফেলেছি। ততক্ষণে ও কিছুটা সামনে চলে গেছে। আমি দৌড়ে গিয়ে ওর সামনে যেয়ে বললাম,
- আচ্ছা তুই কি বিয়ের কথা বলতেছিস? 🙊

এটা বলার সাথে সাথেই আমারে যে একখান থাপ্পর মারলো! জীবনেও এমন থাপ্পর খাই নাই। মেরেই বলল,
- বুঝতে এতক্ষন টাইম লাগলো!!! তোরে তো.....

সিরিয়াসলি, থাপ্পর খেয়ে সব উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। মাথায় কিছুই ঢুকতেছিল না।

- কিরে, ভালই ভালই রাজি হ নাইলে আরো মাইর আছে কপালে।
- মানে, আমরা বিয়ে করবো?😱🔫
- আরে নাহ। আমরা তো জামাই-বউ খেলা খেলবো। 😡
- আরে তুই এত রাগিস ক্যান? এখন না বুঝলে তো জিজ্ঞাসা করবোই।
- ওলে বাবু লে তুমি তো ফিডার খাও। তুমি কিছুই বোঝো না।
- কিন্তু তুই জাস্ট আমার খুব ভালো ফ্রেন্ড। আর আমি তো এমন ভাবিও নাই কখনো।
- আচ্ছা তাহলে কেন তুই এয় দূর আসছিস যদি আমরা শুধুই ফ্রেন্ড হয়ে থাকি? কেন তোর এত টেনশন হচ্ছিলো আমাকে নিয়ে?  আর আমাত বিয়ের কথা শুনে তোর মুখ চুপসে গেছিলো কেন? উত্তর দে।

এবার নিজেই চিন্তায় পরে গেলাম। আসলেই তো কেন হল এসব। তাহলে কি আমিও ওকে ভালোবাসি তবে বুঝতে পারছি না। এর আগেও আমার সাথে এমন একবার হয়েছিল। একটা মেয়েকে পছন্দ করতাম মেয়েটা নিজেই আমাকে প্রপোজ করার পরেও না করে দিছিলাম। কারন বুঝতে পারি নাই। পরে যতদিনে বুঝছি ততদিনে যে অন্যের গার্ল্ফ্রেন্ড হয়ে গেছিলো। কিতু কষ্ট পাইছিলাম ভালই। এবার তাহলে এই কাজ টা আর করবো না।

- আচ্ছা অনু, যদি আমি তোর কথায় রাজি হই তাহলে কি আজই বিয়ে করা লাগবে আমাদের?
- কেন, করা লাগলে করবি না?
- না মানে, এভাবে কাউকে কিছু না বলে। তাছাড়াও আমার লেখাপড়া এখনো শেষ হয় নাই।
- করা লাগলে করবি। করাই লাগবে তোর। নাইলে 🔫
 অবশ্য এমন কিছু করা লাগবে না। তুই তো ভিতু। ভয় নাই।
 - কিন্তু শায়লারে কি কমু?
 - ওর দায়িত্ব আমার উপ্রে ছাইড়া দে। তোদের ২ টার ব্রেকআপ  করানোর দায়িত্ব আমার।

এরপর আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে গেল। কিন্তু সেটা বিয়ে বাড়ি বলে মনে হল না। পরে জানলাম এটা ওর আপুর বাসা। আর ওখানে সবার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো ওর ফ্রেন্ড হিসাবে।

এর কয়েকদিন পর,
- বাবুনি, কেমন আছো?
- ওই তোরে না বলছি এসব আজাইরা কথা আমারে না কইতে।
- এসব কি বলো, তুমিই তো বলেছিলে আমারা বিয়ে করবো। 😍
- বিয়ের কথা কইছি, প্রেম করার কথা কই নাই। 😒
বিয়ের আগ পর্যন্ত আমরা আগের মত জাস্ট বেস্ট ফ্রেন্ড। আর বিয়ের পর হাজব্যান্ড ওয়াইফ। নো জিএফ বিএফ। নো রিলেশন।
- কিন্তু তার পরেও আমাদের আগে থেকেই প্রাক্টিস করা উচিত। নাহলে বিয়ের পরেও তুই করে বিলার অভ্যাস টা থেকেই যাবে।
- থাকলে থাকবে। এমনিতেও তোরে তুমি করে বলার কোন ইচ্ছা আমার নাই। 😒
.
এভাবে এসব নিয়ে কথা প্রতিদিনই চলতে থাকে আমাদের। আর অপেক্ষা মাত্র ৭ মাস। এর পরেই পড়ালেখা শেষ। তারপরই বিয়ে 😁
.
.
আর শায়লা? হুম, বেচারি। প্রথম লাভ ছিল তো। তাই ভালই ছ্যাকা খাইছে। অনুর বুদ্ধির প্রশংসা না করে উপায় নাই। স্পেশালি যখন কোন ব্রেকআপের ব্যাপার আসে তখন তো আর বলতেই হয় না। 😂🔫
.
(সমাপ্ত)

Comments

Popular posts from this blog

একটি ছ্যাকা খাওয়ার গল্প

চিঠি=বাঁশ (২য় পর্ব)

ব্রেকআপ অনু (পর্ব-১)