সুইসাইড



বিঃদ্রঃ গল্পটা সম্পূর্নই কাল্পনিক। কেউ এটাকে সিরিয়াসলি নিবেন না। এটা সম্পূর্নই একটা বিনোদন মূলক গল্প।


৯ জুলাই ২০১৮, সোমবার
এখন ১ টা বাজে। আর মাত্র ১ঘন্টা বাকি রেজাল্টের। অবশ্য আমার এক্সাম খুবই ভালো হয়েছিলো, তবুও অনেক টেনশনে আছি। কারন ২০১৭ সালের ইন্টারের ব্যাচের যা অবস্থা করেছিলো। আমরা তো তারই পরের ব্যাচ। আল্লহই জানেন কি হবে।

আসলে যারা ছোট থেকেই খারাপ স্টুডেন্ট তাদের কোন প্যারা নাই। আর আমিও একজন মানুষ! সালার না পারলাম ভালো স্টুডেন্ট হতে আর না পারলাম খারাপ স্টুডেন্ট হতে। SSC তে A+ না পাওয়ার খোটা এখনো শুনতে হয়। আর এবার যদি A+ মিস হয় তাহলে আব্বু আর আমাকে পড়াবেই না। দুবাই পাঠিয়ে দিবে। আর সেজন্য ভিসা পাসপোর্ট সব রেডিও করে রেখেছে আব্বু। কিন্তু আমি একজন IT Security Specialist হতে চাই।

অবশ্য আমি অলরেডি IT Security Specialist। তবে আমার শুধু সার্টিফিকেট টাই নাই। এটা কোন ব্যাপার না। মাত্র ১ বছরের একটা কোর্স করলেই পেয়ে যাবো। তারপর এমনিতেই অনেক বড় বড় চাকরী ইজিলি পেয়ে যাবো।

যদিও আব্বু-আম্মু চায় আমি অনেক বড় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হই। কারন এটায় চাকরী ভালো পাওয়া যায় আর বেতনও ভালো। তবে আমার এটার প্রতি কোন ইন্টারেস্ট নেই। কারন আমি চাকরীর জন্য পড়াশোনা করছি না। আমি শেখার জন্য পড়াশোনা করছি। কিন্তু আব্বু আম্মুকে কে বোঝাবে। অবশ্য এটাও আব্বু-আম্মুর দোষ না। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং চাকরীর যা অবস্থা তাতে এরকম চিন্তা করা দোষের কিছু না। তবে আমি তো আমার লক্ষ্য স্থির করেই আছি। কিছু যদি হই তাহলে অবশ্যই IT Security Specialist ই হবো।

পরীক্ষা এত ভালো দেওয়ার পরেও এত্ত টেনশন যে কেন হচ্ছে সত্যিই বুঝে উঠতে পারছি না। অবশ্য আমি আগেই একটা ব্যবস্থা করে রেখেছি। মানে, কিছুদিন আগেই এক বোতল বিষ কিনে এনে রেখেছি। কারন আমি পড়ালেখা করতে চাই। দুবাই যেয়ে কাজ করতে চাই না।

ঠিক ২ টা বাজে। আমি অনেক ট্রাই করছি, কিন্তু রেজাল্ট পাচ্ছি না। সার্ভার বিজি। এমনকি এসএমএস এও রেজাল্ট আসছে না। বুঝতেই পারছিলাম সার্ভারে প্রচুর লোড। এর মাঝে এক ফ্রেন্ড (এক্সামে ও আমার সামনের বেঞ্চে বসেছিল) কল দিলো,
- হ্যালো (আমি)
- বন্ধু তোমার রেজাল্ট তো পাইছি।
- কি আসছে আমার?
- আমারো A- আসছে তোমারও A- আসছে।
- এটা কিভাবে সম্ভব!!! তোমার কি মনে হয় আমরা A- পাওয়ার মত এক্সাম দিছি?
- তা দেই নাই। কিন্তু কি আর করার।

আর কিচ্ছু না বলে কল কেটে দিলাম।  ভাগ্য ভালো পাশে আম্মু বা আপু কেউ ছিল না।
আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। তাই আবার নিজেই কষ্ট করে নেট থেকে দেখার জন্য বসলাম আমার ল্যাপটপ নিয়ে। আসলে এতক্ষন সবার কথা চিন্তা করে আমি কিছুই করিনি। এখন আর কারো কথা ভাবার সময় নেই। এডুকেশন বোর্ড রেজাল্ট সাইটের সম্পুর্ন সার্ভারের কন্ট্রোল নিজের হাতে নিয়ে সার্ভার পুরাপুরি ব্লক করে দিলাম ১০ মিনিটের জন্য। এই ১০ মিনিটের মধ্যে কেউ এই সাইটে ঢুকতে পারবে না। ১০ মিনিট পর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। এবার শান্তিতে আমি আমার রেজাল্ট টা দেখতে পারবো।

কিন্তু রেজাল্ট দেখে সত্যিই খুবই অবাক এবং হতাস। আসলেই A- পেয়েছি।

 আমি সোজা আমার রুমে যেয়ে দড়জা বন্ধ করে একটা সুইসাইড নোট লিখলাম,
"আমি দুবাই যেতে চাই না।"

আমি জানি, এতটুকুই যথেষ্ট। আব্বু-আম্মু এমনিতেই বুঝবে। বিষের বোতল টা হাতে নিয়ে খুলেছি। এমন সময় মনে পড়লো আমাদের এক স্যারের কথা। সেই স্যার একটা গল্প শোনাইছিল। তার এক কলিগের সুইসাইডের গল্প। গল্পটা অনেকটা এমন ছিল,
স্যারের সেই কলিগ কোন একটা কারনে সুইসাইড করবে। তাই সে বিষ কিনে বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে বিষ খেয়ে নিলো। তার ভাষ্যমতে, তখন তার মনে হচ্ছিল যে আগুন নেমে গেল গলা দিয়ে। এরপর পেটে যাওয়ায় পর যা যন্ত্রনা শুরু হল সেটা সহ্য করার মত না। তখন সে আর সহ্য না করতে পেরে ঘর (তাদের ওই ঘর ছিল টিনের) ভেঙ্গে চিল্লাতে চিল্লাতে বের হয়ে এসে উঠানে পরেছিল। পরে বাসার সবাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। তার ভাষ্যমতে, সেটা আরো এক নরকযন্ত্রণা। গলার মধ্যে দিয়ে পাইপ দিয়ে পেটে চাপ দিয়ে দিয়ে পেট থেকে সব খাবার বের করা।

এ পর্যন্ত ভেবেই কাজ হয়ে গেছে। থাক, নাহয় বিষ নাই খেলাম। আরো তো কত উপায় আছে। এত কষ্ট সহ্য করা সম্ভব না।  তবে গুগলে কোন একদিন মনে হয় দেখেছিলাম গলায় দড়ি দিয়ে সুইসাইড করা সব থেকে সহজ। মাত্র ৬ সেকেন্ড কষ্ট হয়। এরপর সেন্স হারিয়ে যায়। এটাই ইজি। এটাই করতে হবে।

আমার রুমের ফ্যানের সাথে দড়ি (আসলে আমার রুমে তো দূরে থাক, সারা বাড়িতে একটা দড়িও পাই নাই। তাই এক ওর্না দিয়েই কাজ চালাচ্ছি) বেধে সুইসাইড করতে গেলাম। গলায় দড়িটা পরার আগে একটু শান্তি অনুভব করছিলাম।

আর দেরি করে লাভ নাই। ঝুলে পরলাম। কিসের ৬ সেকেন্ড। ২ সেকেন্ড হওয়ার আগেই ওর্না ছিড়ে গেলাম পড়ে। ও মা গো। যা ব্যাথা পাইলাম এর থেকে তো বিষ খাওয়াই ভালো ছিল। 😖
.
যদিও আমি মোটা না তাও কিভাবে যেন ছিড়ে গেল। প্রায় ১০ মিনিট উঠতে পারি নাই। ওইভাবে ফ্লোরে শুয়ে থাকার পর উঠে ভাবলাম, কোনভাবেই কাজ হল না। এখন সব থেকে সহজ উপায় ইলেকট্রিক শক। এটাও খুব অল্প সময়েই মানুষকে শেষ করতে সক্ষম।

তাই আর দেরি না করে এটাও ট্রাই করার জন্য বাড়ির মেইন কাটআউট খুলে সেটায় হাত দিলাম। মরলাম তো না বরং এমন এক ঝাটকা দিলো। পুরা শরীরের প্রতিটি অংশ মনে হল খুলে আবার লাগাইলো। আল্লাহরে এর থেকে তো গলায় দড়ি নেওয়াও ভালো ছিল।

আসলে আমি ভুলেই গেছিলাম যে, আমাদের বাড়ির মেইন কাটআউট অনেক উপরে। তাই ওটা ধরতে গেলে ফ্লোরে পা থাকে না। কোন চেয়ারের ওপর দাড়াতে হয়। আর এজন্য মরার পরিবর্তে মৃত্যুর থেকেও বেশি কষ্ট পেলাম। 😖
.
না থামা যাবে না। আমাকে সুইসাইড করতেই হবে। তা নাহলে সবাইকে মুখ দেখাবো কিভাবে। তবে ইলেক্ট্রিক শকের ধারের কাছেও যাবো না। মাফ চাই।

মনে পরলো, আমাদের বাড়ি থেকে ২০ টার পথ দূরেই নদী। নদীতেও ঝাপ দেওয়া যায়। পানি খাওয়া খুব একটা কষ্টের কাজ হবে না। আর আমি তো সাতার শিখেছিলাম ৭ বছর আগে। এই ৭ বছরে কখনো পুকুরেও নামি নাই। তাই সাতার তো কবেই ভুলে গেছি। এবার মজা হপ্পে। 😁
.
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আম্মুকে বললাম, রেজাল্ট আনতে যাচ্ছি। এলাকায় যার সাথেই দেখা হয়, শুধু রেজাল্ট জিজ্ঞাসা করে। আমিও সবাইকে একই কথা বলতেছি, রেজাল্ট আনতে যাচ্ছি।

গেলাম নদীতে। কিন্তু কথা হল, এখানে নদী আছে কিন্তু ব্রিজ তো নাই। আর নদীর কিনার থেকে সুইসাইড ক্যামনে করে?
টেনশনেই পরে গেলাম। পরে এক নৌকা মিটালাম। তাকে আগেই টাকা দিয়ে দিছি। আর বলছি, আমাদের এখানে শুটিং হচ্ছে। দূর থেকে ভিডিও করতেছে। আমি মাঝ নদীতে যেয়ে নৌকা থেকে ঝাপ দিয়ে অভিনয় করবো যে আমি ডুবে যাচ্ছি। আপনি আমাকে বাঁচাতে আসবেন না। কারন এখানে ওই সিনটা ভিডিও করা হবে। আর কেউ বাঁচাতে আসলে তাকেও বাধা দিবেন। আর আমাকে নিয়ে টেনশন করার দরকার নাই। কারন আমি বাংলাদেশের মধ্যে সাতার প্রতিযোগিতায় ৩ বার গোল্ড মেডেল পাইছি। আর তাই, ওই সময় আপনি আমাকে এখানে নামিয়ে সাথে সাথে তীরে ফিরে যাবেন।


এরকম যত রকমের চাপা আছে সব দিয়ে বুঝাইয়া দিলাম তারে। আর তাকে ৫ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিলাম। এবার প্লান মত নদীতে ঝাপ দিলাম। কয়েক সেকেন্ড পানি খাওয়ার পর অবস্থা গেল খারাপ হয়ে। বাঁচার চেষ্টা করছিলাম। এমনি কপাল, সালার ওই সময়ই নদীতে ঢেউয়ের গতি বেড়ে গেল আর আমাকে আবার তীরে পৌছে দিলো।  এটা কি হল! সেই নৌকার মাঝি এসে তো আমার প্রশংসা করতে লাগলো, যে আম অসাধারন সাতার পারি। মেজাজ টা পুরাই খারাপ হয়ে গেল। মাগার নদীতে মরার আর ইচ্ছা নাই। শিক্ষা হইয়া গেছে।

দূরে যেয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলাম, আমি কেন মরতে পারছি না? কেন?
এতভাবে চেষ্টা করেও পারলাম না। কেন পারলাম না? তাহলে অবশ্যই এটার পিছে কোন বড় কারন আছে। কি এমন কারন থাকতে পারে?

আবার হঠাত মাথায় আসলো, আমি যা এক্সাম দিছি তাতে স্যাররা যদি একেবারে একেবারে একেবারেই নাম্বার না দেয় তাও আমার A+ আসার কথা। তাহলে পেলাম না কেন?
তার মানে ইচ্ছা করে এসব করা হইছে?
শিক্ষামন্ত্রীর হাত আছে অবশ্যই। ওরে আগে সাহেস্থা করা লাগবে। ওই সালার জন্য আর কত ছাত্রছাত্রীর জীবন নষ্ট হবে! তাহলে কি ওরে সাহেস্থা করার জন্যই আমি বেঁচে আছি?
হয়তবা। তাহলে আমাকে এটাই করতে হবে।

আর তাছাড়া আমি তো এ্যাসাসিন। 😎
.
(এ্যাসাসিন (Assassin) হল, একধরনের শক্তিশালী মানুষ। তারা সাধারণ মানুষের থেকে অনেক শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান হয়। তাদেরকে সুপার হিউম্যান বললেও ভুল হবে না। মূলত, প্রাচীনকালে মানুষের মাঝে কিছু দ্বন্দের কারনে এই এ্যাসাসিনের সৃষ্টি হয়। তারা নিজেদেরকে এভাবেই গড়ে তোলে। এবং গোপন থাকে সবসময়। আর এদের মূল কাজ হলো মানুষ খুন করা। যারা Assassin Creed গেম খেলেছেন তারা কিছুটা বুঝতে পারছেন।)

আর দেড়ি করে লাভ নেই। সাথে সাথেই চলতে শুরু করলাম শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে।

রাত ১২ টা, শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে চলে আসছি। এখন খুব সাবধানে বাড়ির ভিতরেও চলে আসলাম। অনেক বড় বাড়ি। সালারে খুজে বের করতে অনেক টাইম লেগে গেল। তাও অনেক কষ্টে পেয়ে গেলাম। বেটা এতগুলা শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করে কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।

একটা চিৎকার দিয়েই ঝাপিয়ে পড়লাম ওই সালার ওপর,
- টাক্কুর বাচ্চা টাক্কু, তুই তো শেষ। তোরে কে বাঁচাবে? (এটা বলেই ঘুমন্ত নুরুল টাক্কুরে টেনে তুলে ওর কলার চেপে ধরে কয়েকটা ঝাকি মারলাম।)
- এই এই, কে তুমি!!! সিকিউরিটি, সিকিউরিটি।
- হা হা হা,  কেউ আসবে না। এখন তোর কি হবে রে নুরুল টাকলু? কে বাঁচাবে তোকে আমার হাত থেকে? 😂
- এই, এই, তুমি কি চাও? কে তুমি? তুমি যা চাও তাই দিবো আমাকে ছেড়ে দাও। প্লিজ (কাঁদোকাঁদো বলল)
- আমি এবছর HSC দিছিলাম। Golden পাওয়ার মত এক্সাম দিছিলাম। মাগার তুই আমারে A- দিছোস। সত্যি কইরা ক তো আমার রেজাল্ট কি? আসলে আমি কত পাইছি?
- আমি সত্যিই জানি না। আর যে যা পাইছে তা তো রেজাল্টেই দেয়া হয়েছে। এবার কোন চিটিং করি নাই আগের বারের মত। বাবা, আমাকে ছেড়ে দাও।
- তুই কি সত্যি কথা বলবি নাকি এখনই শেষ কইরা দিমু? (গলায় চাকু ধরে বলেছি)
- আচ্ছা আমি এখনই বলতেছি। তোমার আসল রেজাল্ট আমার ল্যাপটপে আছে।

ল্যাপটপ দিলাম। বেটায় ঘাটাঘাটি করে আমাকে বললো,
- বাবা তুমি Golden পাইছো।
- ওই হ্লার প, আমি তোর কি ক্ষতি করছিলাম যে তুই আমারে A- দিলি!
- ভুল হয়ে গেছে মাফ করে দাও।
- তোর মাফের গুষ্টি মারি। আগে ক আমারে নাম্বার কম দিলি ক্যান? ক্যান কম দিলি? (রাগে আগুন হয়ে বললাম)
- আসলে আমি জীবনে কোন দিন A+ তো দূরে থাক A পর্যন্ত পাই নাই। তাই আমি নুরুল টাকলা শপথ নিছিলাম বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদেরও আর A+ পাইতে দিমু না। মাগার হেরা আরো বেশি পাওয়া শুরু করলো। আমি বই চেঞ্জ কইরা দিলাম। তাও আরো বেড়ে গেল A+।  তারপর দিলাম সৃজনশীল। ১ বছর শান্তি পাইছিলাম। মাগার পরের বছরেরতে পোলাপান আবার A+ পাওয়া শুরু কইরা দিলো। তারপর না পাইরা আবার ৭ টা সৃজনশীল করলাম। এবারেও আমি ব্যার্থ। এরপর না পাইরা চিন্তা করলাম, প্রতিবছর রেজাল্টের আগেই নির্দিষ্ট কইরা নিমু যে এবছর কতগুলারে A+ দিমু। এবছর ২০,০০০ রে দেওয়ার কথা চিন্তা করছিলাম। মাগার ৫০,০০০ A+ পাইছে। তাই প্রথম ২০,০০০ রে রাইখা বাকি সব A আর A- দিয়া দিছি। বাবা তুমি সেই A- এর দলে চইলা গেছো। মাগার আমি নুরুল তোমারে কথা দিলাম। তোমারে আমি অহনি গোল্ডেন দিয়া দিতাছি। তোমার সার্টিফিকেট হইবো গোল্ডেন  সার্টিফিকেট। তোমারে আমি বুয়েটে এ্যাডমিশন ছাড়াই ভর্তি কইরা দিমু। (কেঁদে।কেঁদে বলল)

এটা শুনে চোখ আমার চকচকে হয়ে গেল। 😍
ছেড়ে দিয়ে বললাম,
- তারাতারি আগে আমার গোল্ডেন দে।
- এইযে দিচ্ছি এখনই।

মনে হল, কোন বাটন টাইপের কিছুতে চাপ দিলো ব্যাটায়। তবে তাতে আমার ইন্টারেস্ট নাই। আমার চাই গোল্ডেন। 😁
.
কিন্তু ১০ সেকেন্ডের মাথায় রুম ভরে গেল সিকিউরিটি গার্ডে। আমাকে ঘিরে ফেললো প্রায় ২০ টা সিকিউরিটি গার্ড। এবার আমাকে বলতে শুরু করলো নুরুল টাক্কু,
- কিরে? তুই নাকি আমারে মাইরা ফেলবি? আমি নাকি টাক্কু? হা হা হা হা.... এখন তোকে কে বাঁচাবে? গোল্ডেন চাই তোর? হা হা হাহা...... খাড়া তোরে অহন ফেইল করাইয়া দিমু। হা হা হা হা হা.....

 আমার মুখের কোনে একটা তীক্ষ্ণ হাসি খেলে গেল। কারন ওরা এখনো বোঝেনি যে আমি এ্যাসাসিন। আর একটা এ্যাসাসিন ৪০-৫০ জনকে এমনিই মেরে ফেলতে পারে। এটা কোন ব্যপারই না। আর এখানে তো মাত্র ২০ জন।

অতঃপর, সবাইকে মিনিটের মধ্যে মাত্র ২ টা ছোট চাকু দিয়েই খালাস করে দিলাম। ওদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে পিস্তল ছিল। কিন্তু তাতে কিছু করতে পারে নাই। গুলি চালানোর আগের ফিনিশ।

টাক্কু তো পুরাই আকাশ থেকে পরলো। আমি এইটা কি করলাম বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর।
এবার আমি নুরুল টাক্কুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
- তোর খুব পাখনা গজাইছে, তাই না?
আমার সাথে লাগতে আইছোস?  আমার সাথে বেইমানী করার সাহস হয় ক্যামনে তোর? এখন ক্যামনে বাঁঁচবি তুই? (প্রচুর রেগে, অনেক জোরে চিল্লান দিয়ে)
- বাবা আমাকে মাফ করে দাও। আর এই ভুল হবে না। এবারের মত মাফ করে দাও। আমাকে ছেড়ে দাও তাহলে তুমি সারাজীবন যত এক্সাম দিবা সব এক্সামে ১০ টার মধ্যে যে কোন ১ টা কইরা সৃজনশীলে এক্সাম দিবা তুমি। ১ টা সৃজনশীল সময় ৩ ঘন্টা, এর মাঝে ৩ বার বই দেখে নেওয়ার সুযোগ পাবা। আর প্রতি পরীক্ষার আগে আমি তোমারে নিজে প্রশ্ন দিয়ে আসবো।
- ও আচ্ছা, তাইলে তুই ই সালা প্রশ্ন আউট করিস। তাই না? আর আমাদের মত ভালো ছাত্ররা এক্সামে A+ পেয়েও পায় A- আর যাদের পাশ করার কথা না তারা এক্সামে প্রশ্ন দেখে Golden পায়। তোরে তো খাইছি।

এটা বলেই ঝাপিয়ে পরলাম ওর ওপর। তখন মনে পরলো, এই সালারে মারার আগে আমার Golden কনফর্ম করে নেই। ওরে দিয়া আগে গোল্ডেন কনফর্ম করার পর আমাকে জিজ্ঞাসা করছে,
- বাবা, এখনো কি আমাকে মেরে ফেলবা?
- জ্বি না। তার থেকেও খারাপ কিছু করবো। হা হা হা হা.....

এটা বলেই ওর জিহ্বা কেটে দিলাম সাথে ওর হাত ২ টা কেটে দিলাম। এবার না তো নতুন কোন উল্টাপাল্টা নিয়ম চালু করতে পারবে আর না তো কোন স্টুডেন্টের বাশ দিতে পারবে।

হঠাত দেখলাম ঘরে অনেকগুলা সি সি ক্যামেরা লাগানো। সাথে সাথেই নুরুল টাক্লার কম্পিউটার দিয়ে সবগুলো ক্যামেরা হ্যাক করে সব ভিডিও ডিলিট করে দিলাম। এতে ১০ মিনিটের মত সময় লাগলো। কিন্তু এই সময়েই যা হওয়ার তা হয়ে গেল। মানে, পুলিশ এসে পরেছে। ঘিরে ফেলেছে পুরা বাড়ি। আমি দৌরে একদম ছাদে উঠে গেলাম। ২০ তলা ছাদে। আর পুলিশও আমার সাথে সাথে আমার পিছেই দারিয়ে আছে। এখানে এত পুলিশ ছিল যে আমি বুঝতেই পারছিলাম এত জনের সাথে পারা কখনই সম্ভব হবে না। আর এ্যাসাসিন কখনো আত্মসমর্পণ পরে না। তাই সুইসাইড ই বেটার ওয়ে। যদিও আমি যেহেতু এ্যাসাসিন তাই মাত্র ২০ তলা থেকে মৃত্যুও হবে না। তাই পালানোর একটা চান্স নেওয়াই যায়।

দিলাম একটা লাফ, সাথে একটা চিৎকার।  আআআআআআআআআআআআআ


এর মাঝে সজোরে ধাক্কা অনুভব করলাম। সাথে আম্মুর গলায় শুনতে পেলাম,
- এই আনিক, চিল্লাচ্ছিস কেন ঘুমের মাঝে? কোন খারপ স্বপ্ন দেখছিস নাকি? তাড়াতাড়ি উঠে পড় ১০ টা বাজে।
- আম্মু, আসলে টি টুয়েন্টি ম্যাচ দেখতেছিলাম তো। ব্যাটসম্যান ৬ মারছে, তাই আমি চিল্লান দিছি।

এবার তাড়াতাড়ি মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি সকাল ৭ টা বাজে, মানে আম্মুর সকাল ১০ টা। 😒
আর আজ ৩১ জুলাই ২০১৭, রবিবার। 😒
পুরাটাই নেহাতই একটা স্বপ্ন ছিল। তবে স্বপ্নটা জোস ছিল 😁🔫
আর কিছু ভেবে লাভ নাই। কারন না আমি IT Security Specialist আর না তো কোন এ্যাসাসিন। তাই রেজাল্ট খারাপ হলে কিছুই করতে পারবো না। তাড়াতাড়ি পড়তে বসি। নাইলে আমি ফেইল। 😖
(সমাপ্ত)

Comments

Popular posts from this blog

একটি ছ্যাকা খাওয়ার গল্প

চিঠি=বাঁশ (২য় পর্ব)

ব্রেকআপ অনু (পর্ব-১)