চিঠি=বাঁশ (৫ম পর্ব)
বাসায় এসে রেস্ট নিয়ে একটু পরেই বের হলাম সরনের বাসার উদ্দেশ্যে। ওর বাসায় যেয়ে ওর সাথে মারামারি (মানে আসলে ব্যাপারটা আসল মারামারি না। বলা যায় একটু মারামারির মত মজা) করে চলে আসলাম। এর মাঝে যে আমি ওর মাথার একটা চুল ছিঁড়ে আনছি এটা ও খেয়ালই করে নাই। এবার হবে আসল কাজ। 😁😁😁
.
অনেকের মুখেই শুনেছিলাম যে, এইরকম চুল নিয়ে নাকি কি কি করলে মোটামুটি অনেক কিছু করা যায়। তাই আমি ভাবলাম যদি ওদের চুল দিয়ে ওদের মিল করাতে পারি তাহলে তো সেই একটা কাজ হবে। খুব অল্প সময়ে অল্প পরিশ্রমে আমার উদ্দেশ্য সফল। 😁✌
.
কিন্তু সমস্যা টা অন্য জায়গায়। আমি আসলে জানি না যে এই কাজ টা কে করতে পারে। তাও ঘুরতে থাকলাম এদিকওদিক। কিন্তু, এইভাবে কি আর কাজ হয়? বার বার কি আর আন্দাজে গুলি লাগে?
.
তাও মনে হল, এবার আন্দাজেই গুলি টা লেগে গেছে। দেখলাম পাগলের মত দেখতে এক লোক সামনেই একটা গাছের নিচে বসে আছে। গেলাম তার কাছে। সে খুব গভীর দৃষ্টিতে আমাকে দেখে নিয়ে বলল,
- কিছু লাগবে তোর?
.
কথার মধ্যেই কেমন কবিরাজ কবিরাজ ভাব। একেই তো দরকার। 😁😁
.
- আসলে, একটা খুব গোপন সমস্যা আছে আমার। সমাধান করে দিতে পারবেন?
- কি সমস্যা?
- আসলে একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু ভয় পাই, তাই বলতে পারি না। কোন ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?
- হ্যা, পারবো। কিন্তু এজন্য যে চুল দরকার। মেয়েটার চুল।
- আছে। আমার কাছে আছে। (দাঁত ৩২ টা বের করে)
- আচ্ছা দে (কেমন একটু করলো, ঠিক ব্যাখ্যা করতে পারবো না)
.
চুল দিলাম। এবার আমার নাম পরিচয় সব চাইলো। আমি সবকিছু সরনের টা বলে দিছি। 😁😁
.
কি কি করলো, একটু পরে কিসব এক করে একটা তাবিজ আমাকে দিলো। আর বলল, এটা গলায় ঝুলিয়ে রাখতে। এটা তো মহা সমস্যা হল। কারন, সরনের গলায় তাবিজ কিভাবে দিবো? বিকল্প উপায় চাইলাম। তিনি বললেন তা সম্ভব না। কি আর করার। সব শেষে বললাম,
.
- এত বড় একটা উপকার করলেন, কত টাকা দিতে হবে?
- এতই যখন বলছিস, তাহলে দে ৫০০ টাকা।
- এত টাকা। একটু কম রাখেন। (একটু অবাক হয়ে)
- এইখানেও দামাদামি? তোর তাবিজে কিন্তু কাজ হবে না দামাদামি করলে।
- কিন্তু আমার কাছে এখন এত টাকা নাই।
- কত আছে?
- ৩০০ টাকা
- দে
- সব?
.
কিছু বলল না, কিন্তু চোখের চাহনিতেই বুঝে গেছি। তাই দিয়ে দিলাম সব। আমার পকেট ফাকা।
সব তো হল, কিন্তু সমস্যা টা হল এটা সরনের গলায় দিবো কিভাবে?
.
চিন্তা করতে করতে গেলাম সরনের বাসায়।
- দোস্ত তোর জন্যে একটা গুড নিউজ আছে। (আমি)
- কি গুড নিউজ?
- তোর জন্য জিএফ পাইছি। মেয়েটা সেই কিউট।
- দেখ দোস্ত, ভাল ছেলেদের গার্লফ্রেন্ড থাকে না।
.
আমার চোখ কপালে উঠে গেল। কি বলল ও এটা!!!! যে ছেলে ২ মাস আগেও আমাকে গার্লফ্রেন্ড খুজে দিতে বলতো, এখন সে বলে এই কথা!!! আমি অবাক হয়েই তাকিয়ে আছি ওর দিকে। হঠাত, বলল
- এখন যা। পড়তে হবে। অনেক পড়া আছে আমার। কাল কথা হবে।
.
মাইরালা!!!!! ও পড়াশোনাও করে!!!!!! ক্যামনে কি!!!!
.
যাক, ব্যাপার না। চলে এলাম। আসার সময় ভাবছিলাম কি করা যায়। হঠাত দেখি সেই পাগলের মত লোকটাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমি এগিয়ে গিয়ে একটা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম,
- আচ্ছা আংকেল এই পাগলকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?
- এইটা পাগল? হা হা হা, এইটা এক নাম্বারের ক্রিমিনাল। কিছুদিন আগে জেল থেকে পালিয়েছিল। আজ ১০০০ টা ইয়াবা সহ আবার ধরা পরছে। ছদ্মবেশি ক্রিমিনাল এটা।
.
মনে মনে ভাবতে লাগলাম, সালার এইগুলাও হইলো আমার সাথে। হুদাই ৩০০ টাকাই নষ্ট। তাবিজটা ফেলে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
.
বাসায় এসে আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা যে কি হচ্ছে আমার সাথে, আর কি হবে আমার সাথে। কোন কিছুতেই সফল হচ্ছি না কেন? কেউ আমার প্লান আগে থেকেই জেনে আমাকে ফাঁসাচ্ছে? নাকি আমিই কোন পয়েন্ট মিস করছি? কিছু একটা ঝামেলা আছে। কারন, যতই একটা মেয়ে কোনদিন রিলেশন না করুক, তবুও তার একটু লজ্জা বলতে কিছু একটা জিনিস থাকা উচিৎ। এইভাবে কেউ জোর করে বিএফ বানায়? নাহ, রাইসার মধ্যে ভ্যাজাল আছে।
.
এখন আসল কাহিনী জানতে হলে আমাকে ডিটেকটিভ হতে হবে। কিন্তু, ডিটেকটিভ হয় ক্যামনে? 😖😖
.
হঠাৎ মনে হল, আমি তো সবাইকেই কম বেশি ভালই বাঁশ দিসি। তাহলে সবাই মিলে আমাকে বাঁশ দেওয়ার প্লান করে এসব করছে না তো? তাহলে কি আদিল আর মিনহাজও এর সাথে জড়িত?
.
কি করবো কিছুই মাথায় ঢুকছিল না। এর মাঝে তিশার কল।
এরপর কথায় কথায় তিশাকে সবই বললাম। তিশা সব শুনে আমাকে বলল,
- আচ্ছা, টেনশন করার কোন কারন নেই। আমি দেখি কি করা যায়। আপনি টেনশন করবেন না। আমি আছি তো।
- ওকে
.
রাতে আবার তিশার কল,
- হ্যালো
- রাখেন আপনার হ্যালো। অনেক বড় কাহিনী হয়ে গেছে। আপনার সব সমস্যার সমাধান পেয়ে গেছি।
- কি হইছে? কি পাইছো?!!!!!
- এখন না। কাল বলবো। আমার জন্যে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে সকালে দেখা করবেন। সবকিছু বলবো।
- তা নাহয় হল। কিন্তু গোলাপ ফুল দিয়ে কি করবো?
- কি আর করবেন, আমাদের স্কুলে এনে বিক্রি করবেন। হুহ। বাই (রেগে)
.
এতক্ষণে বুঝলাম। কিন্তু বুঝে লাভ নাই। কল কেটে দিছে। আসলেই পাগলি। এখন আর কি, আবার কল দিয়ে মহারাণীর রাগ ভাঙাতে হবে। ব্যাপার না। এই কয়দিনে ভালই অভ্যাস হয়ে গেছে। সব ঠিক আছে, কিন্তু ও এসব সমস্যার সমাধান করলো কিভাবে? বড়ই চিন্তার বিষয়। সে যাই হোক, আমি আমার কাজ করি। কাল দিন টা আমার চরম যাবে। ইয়ো ইয়ো। 😁😁😁
(চলবে)
Comments
Post a Comment